অনুপাত কাকে বলে?
অনুপাত কাকে বলে? | অনুপাত কত প্রকার ও কি কি?
“অনুপাত” শব্দ টা শুনলেই অনেকের কাছেই পরিচিত মনে হয়। ছোট বেলা অংক বিষয়টি করতে গিয়ে এর সাথে প্রথম পরিচয় ঘটে। জানা হয় এর প্রাথিমক ধারণা সম্পর্কে। অনুপাত সম্পর্কে জানা আমাদের প্রায় সকলেরই খুব প্রয়োজন। কারণ এর গুরুত্ব অপরিসীম।
স্কুলে অধ্যায়নরত থাকা অবস্থা ছাড়াও বিভিন্ন চাকরি ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার হয়ে আসছে। তাছাড়া দৈনন্দিন জীবনে এর ব্যবহার তো আছেই। যেমনঃ ভোগ্যপণ্য উৎপাদনে, কোনো কিছুর আকার আয়তন সঠিক করার ক্ষেত্রে, খাদ্যদ্রব্যাদি তৈরিতে অনুপাত এর ব্যবহার হয়ে থাকে।
মজার বিষয় হচ্ছে আজকের আর্টিকেলটি অনুপাত কাকে বলে তার উপর। আজকের আর্টিকেলে অনুপাত কাকে বলে ছাড়াও আমরা জানবো এর বিস্তারিত সম্পর্কে। চলুন তাহলে প্রথমেই জেনে নেই অনুপাত কি এবং অনুপাত কাকে বলে।
অনুপাত কি? | What Is Ratio?
“Ratio” শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে অনুপাত। আর অনুপাত শব্দের অর্থ হচ্ছে তুলনা। অনুপাত মূলত ভাগের সংক্ষিপ্ত রূপ। এর অবশ্য কোনো একক নেই। অনুপাত সাধারণত দুটি রাশির মধ্যে তুলনা করে থাকে। অনুপাত সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চলুন তার আগে জেনে নেই অনুপাত কাকে বলে।
অনুপাত কাকে বলে?
দুইটি সমজাতীয় রাশির মধ্যে একটি থেকে অপরটি কত গুন কিংবা কত অংশ তা বের করতে মূলত ভগ্নাংশ ব্যবহার করা হয়। আর এই ভগ্নাংশকেই বলা হয় রাশি দুইটির অনুপাত। যেহেতু অনুপাত কে ভগ্নাংশকে দ্বারা প্রকাশ করা হয় সুতরাং এর কোনো এককও নেই।
অনুপাত কাকে সেটি আমরা জানলাম। এবার জানবো, অনুপাত এর প্রকারভেদ সম্পর্কে। কিন্তু তার আগে চলুন জেনে নেই অনুপাত এর কিছু বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। যে বৈশিষ্ট্য গুলো অনুপাত বিষয় টিকে আরো বেশি স্বচ্ছ ধারণা দিবে।
অনুপাত এর বৈশিষ্ট্য
- ভাগের সংক্ষিপ্ত রূপ বলা হয় অনুপাত কে।
- যেহেতু অনুপাত এর একক নেই তাই রাশি গুলোই এককে প্রকাশ করা হয়।
- অনুপাত কে শুদ্ধ সংখ্যা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
- রাশি দুইটি যদি ভিন্ন হবে তবে অনুপাত গঠন করা যায় না।
অনুপাত কাকে বলে কিংবা এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানার পর এবার জানা প্রয়োজন অনুপাত এর প্রকারভেদ সম্পর্কে। চলুন জেনে নেই অনুপাত কত প্রকারের হয়।
অনুপাত এর প্রকারভেদ
অনুপাত এর প্রকারভেদ সম্পর্কে বলতে গেলে এক কথায় বলা যায় অনুপাত এর প্রকার অনেক। অনেকে অনেক ভাবে এই প্রকারভেদ এর বিস্তারিত আলোচনা করে থাকে। চলুন আমরাও জেনে নেই অনুপাত এর কিছু প্রকারভেদ সম্পর্কে।
(০১) সরল অনুপাতঃ
অনুপাতে দুইটি রাশি থাকা মানেই হচ্ছে সেটি সরল অনুপাত। দুইটি রাশি ছাড়া অনুপাত কিংবা সরল অনুপাত কোনটিই সম্ভব হয়ে উঠে না। উদাহরণঃ ৪ : ৬।
(০২) মিশ্র অনুপাতঃ
মিশ্র শব্দটি শুনে এখানে বুঝাই যাচ্ছে যে মিশ্র জাতীয় কিছু ঘটে। মিশ্র অনুপাত বলতে বোঝায়, একের অধিক সরল অনুপাত এর পূর্ব এবং উত্তর রাশির গুণফল কে পূর্ব এবং উত্তর রাশির গুণফল মাধ্যমে ধরেই যে অনুপাত বের করা হয় তাই মিশ্র অনুপাত।
উদাহরণঃ ৩ : ২ এবং ১ : ২ এর যদি মিশ্র অনুপাত করি তবে ফলাফল দাঁড়াবে ঠিক এমন ৩X১ : ২X২ = ৩ : ৪।
(০৩) ব্যস্ত অনুপাতঃ
একটি সরল অনুপাত এর উত্তর রাশিকে পূর্ব রাশি এবং পূর্ব রাশিকে উত্তর রাশি করার পর যে অনুপাত পাওয়া যায় তাকে ব্যস্ত অনুপাত বলে। উদাহরণঃ ১৩ : ৪ এর ব্যস্ত অনুপাত হবে ৪ : ১৩।
(০৪) গুরু অনুপাতঃ
যদি কোনো একটি সরল অনুপাত এর পূর্ব রাশি উত্তর রাশি থেকে বড় হয় তবে তাকে গুরু অনুপাত বলা হয়।
উদাহরণঃ ৮ : ৫।
(০৫) লঘু অনুপাতঃ
একটি সরল অনুপাত এর পূর্ব রাশি যদি উত্তর রাশি থেকে ছোট হয় তবে তাহলে লঘু অনুপাত বলা হয়। উদাহরণঃ ৫ : ৯।
(০৬) একক অনুপাতঃ
যদি কোনো সরল অনুপাত এর পূর্ব রাশি এবং উত্তর রাশি সমান হয় তবে তাকে একক অনুপাত বলে। উদাহরণঃ ৮ : ৮।
(০৭) সমতুল অনুপাতঃ
শূন্য (০) ব্যাতীত যেকোনো সংখ্যা দিয়ে পূর্ব রাশি এবং উত্তর রাশি কে ভাগ করলে যদি অনুপাত এর মানের কোনো পরিবর্তন না হয় তবে তাকে সমতুল অনুপাত বলা হয়।
(০৮) ধারাবাহিক অনুপাতঃ
যখন দুইটি ভিন্ন অনুপাত কে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা হয় তখন সেটিকে ধারাবাহিক অনুপাত বলা হয়।
(০৯) বহুরাশিক অনুপাতঃ
সাধারণত তিন বা তিনের অধিক রাশির অনুপাত কে বহুরাশিক অনুপাত বলা হয়। উদাহরণঃ ৭ : ৪ : ৩।
সম্পর্কিত পোস্ট:
>>> সুতরাং বলা যায়, অনুপাত কাকে বলে জানতে গেলে জানা যায় এর আরো পরিধি সম্পর্কে। অর্থাৎ, অনুপাত এর বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্পর্কে। যেটি জানলে অনুপাত সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা পাওয়া যায় নিঃসন্দেহে।