কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি ? হার্ডওয়্যার কত প্রকার ও কি কি?
হার্ডওয়্যার কি
হার্ডওয়্যার শব্দটির সাথে পরিচিত নয় এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। বর্তমান যুগে কম্পিউটারে নিত্যনতুন ভিন্ন ভিন্ন হার্ডওয়্যার যুক্ত করা হচ্ছে উন্নত মানের জন্য। পাশাপাশি ঠিক রাখা হচ্ছে গুণগতমান। দিন যত এগুচ্ছে মানুষ তত সুপার ফাস্ট এবং বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার ব্যবহার করতে চাচ্ছে কিংবা চায়।
আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণই আলোচনা করা হবে হার্ডওয়্যার কি এবং এর বিস্তারিত সম্পর্কে। কারণ মানুষ দিন শেষে বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন হার্ডওয়্যার ব্যবহারের পিছনেই ছুটবে বা ছুটতে চায়।
তাহলে চলুন প্রথমেই জেনে নেই হার্ডওয়্যার কি তা সম্পর্কে।
হার্ডওয়্যার কি?
হার্ডওয়্যার টা মূলত কি তা যদি বলি তাহলে বলা যায় হার্ডওয়্যার হচ্ছে কম্পিউটারের বাহ্যিক পার্ট বা অংশ। অর্থাৎ, যা ধরা যায়, ছোঁয়া যায়। যেমনঃ কী-বোর্ড, মাউস, মনিটর, সিপিইউ, হার্ডডিস্ক ইত্যাদি। হার্ডওয়্যার কে আবার কমিউটার এর দেহও বলা যায়।
হার্ডওয়্যার কি তা জানার পর এবার চলুন আরেকটু ক্লিয়ার করে জেনে নেই হার্ডওয়্যার কাকে বলে তা সম্পর্কে।
আর ও পড়ুন:
- গড় কাকে বলে?
- উপাত্ত কাকে বলে? উপাত্ত কত প্রকার ও কি কি?
- আবহাওয়া পরিবর্তন কি? | আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণ কি কি?
হার্ডওয়্যার কাকে বলে?
হার্ডওয়্যার কে কম্পিউটার এর ভৌত উপাদান বলা হয়। কারণ হার্ডওয়্যার ধরা যায়, ছোঁয়া যায়। এখন ভৌত উপাদান যদি বলি তাহলে বলা যায়, কমিউটার এর বাহিরের অংশ কে। একটা কম্পিউটার তৈরি করা হয় নানা যন্ত্রাংশ দিয়ে। যেমনঃ মাদারবোর্ড, মনিটর, মাউস, সিপিইউ ইত্যাদি। এগুলোকেই বলা হয় হার্ডওয়্যার।
হার্ডওয়্যার কি বা হার্ডওয়্যার কাকে বলে তা তো জানা হলো। এবার চলুন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কাকে বলে বা এর পরিচিতি সম্পর্কেও জেনে নেই।
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কাকে বলে?
একটি কম্পিউটার তৈরি করতে ব্যবহৃত করা হয় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সমূহ। আর এই যন্ত্রাংশ সমূহকে একত্রে বলা কম্পিউটার হার্ডওয়্যার। এই হার্ডওয়্যার হচ্ছে কম্পিউটার এর খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ সমূহ। এগুলোর সমন্বয় ছাড়া কম্পিউটার তৈরি করা সম্ভব হয় না।
হার্ডওয়্যার কি তা জানার পর মূলত মনের মধ্যে প্রশ্ন আসে যে হার্ডওয়্যার এর কাজ টা কি। অনেকেই এই প্রশ্নটা করে থাকেন। চলুন হার্ডওয়্যার এর কাজ সম্পর্কে একটু ধারণা নেয়া যাক।
হার্ডওয়্যার এর কাজ
আমরা যখন কম্পিউটারে কোনো কাজ করতে চাই তখন আমরা কম্পিউটার কে কিছু নির্দেশ দিয়ে থাকি। আর এই নির্দেশ অনুযায়ী কম্পিউটার সেই কাজ গুলো সম্পন্ন করে থাকে হার্ডওয়্যার এর মাধ্যমে। এটাই মূলত হার্ডওয়্যার এর কাজ।
এবার আসি, হার্ডওয়্যার এর অংশ নিয়ে আলোচনায়। যা আমাদের জানতেই হয়।
আর ও পড়ুন:
হার্ডওয়্যার এর অংশ
হার্ডওয়্যার এর অংশ সাধারণত ২ টি। যেমনঃ ইন্টারনাল হার্ডওয়্যার এবং এক্সটারনাল হার্ডওয়্যার। এই ২ টি অংশ যদি বিস্তারিত ভাবে বলতে যাই তবে, হার্ডওয়্যার
- ইন্টারনাল হার্ডওয়্যারঃ ইন্টারনাল বলতে আমরা সবাই ভেতরকার কথা বুঝি। তেমনি কম্পিউটার এর ক্ষেত্রে ইন্টারনাল হার্ডওয়্যার হচ্ছে কম্পিউটার এর ভেতরকার হার্ডওয়্যার সমূহ। এই হার্ডওয়্যার গুলো কম্পিউটার এর ভেতরেই থাকে। যেমনঃ সিপিইউ, মাদারবোর্ড, পাওয়ার সাপ্লাই, মডেম, র্যাম, ড্রাইভ ইত্যাদি।
- এক্সটারনাল হার্ডওয়্যারঃ এক্সটারনাল বলতে বুঝানো হয়, কম্পিউটার এর বাহিরের অংশ কে। অর্থাৎ, কম্পিউটার এর বাইরে যেসব হার্ডওয়্যার থাকে, যা ধরা যায়, দেখা যায় কিংবা ছোঁয়া যায় সেগুলোই হচ্ছে এক্সটারনাল হার্ডওয়্যার। যেমনঃ মনিটর, মাউস, কী-বোর্ড, প্রিন্টার, হেডফোন ইত্যাদি।
এবার চলুন, সামান্য কিছু হার্ডওয়্যার এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনে নেই।
হার্ডওয়্যার এর বৈশিষ্ট্যঃ
- হার্ডওয়্যার এর অবশ্যই উপস্থিতি থাকে।
- হার্ডওয়্যার দেখা যায়, ছোঁয়া যায়।
- কোনো প্রকার ভাইরাসই হার্ডওয়্যার কে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে না।
- অনেক সময়ের ব্যবধানে হার্ডওয়্যার নষ্ট হয়ে যায় কিংবা ধীরগতি সম্পন্ন হয়।
- হার্ডওয়্যার এর কোনো প্রকার কপি হয় না।
- হার্ডওয়্যার তৈরি করা হয় সাধারণত বড় বড় প্রতিষ্ঠানে।
হার্ডওয়্যার কি বা এর সম্পর্কে অনেক কিছুই এত সময় ধরে আলোচনা করা হলো। এবার যা আলোচনা করা যায় তা হচ্ছে হার্ডওয়্যার এর প্রকারভেদ নিয়ে। চলুন সহজ করে জেনে নেই, হার্ডওয়্যার এর প্রকারভেদ সম্পর্কে।
আর ও পড়ুন:
হার্ডওয়্যার এর প্রকারভেদ
সহজ ভাবে বলতে গেলে, হার্ডওয়্যার ৫ প্রকার। যেমনঃ
- Input
- Processing
- Output
- Storage and
- Communication
চলুন এবার বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।
>> Input: ইনপুট হার্ডওয়্যার মূলত এমন এক ধরণের হার্ডওয়্যার বা ডিভাইস যা কম্পিউটারে কোনো কার্য সম্পাদন করতে কম্পিউটারে ডাটা বা তথ্য প্রদান করে থাকে। এতে কম্পিউটার ব্যবহারকারী এবং ইনপুট হার্ডওয়্যার এর মধ্যে সহজ একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হয়। ইনপুট হার্ডওয়্যার সাধারণত মাইক্রোফোন, মাউস, স্ক্যানার ইত্যাদি হয়ে থাকে।
>> Processing: প্রসেসিং শব্দ টা শুনেই আমরা কিন্তু সহজেই আন্দাজ করতে পারি যে, এখানে ইনপুটকৃত তথ্য টা কে প্রসেস করার মাধ্যমে একটি আউটপুট বের করা হয়। প্রসেসিং মূলত কম্পিউটার এর মূল কাজ। এখানে ডাটা ইনপুট দেয়ার মাধ্যমে যেকোনো কাজের ফলাফল বের করা হয় প্রসেসিং এর মাধ্যমে। প্রসেসিং এর উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, CPU, ALU, GPU ইত্যাদি।
>> Output: আউটপুট হচ্ছে কম্পিউটারে ইনপুটকৃত ডাটা কিংবা তথ্য দৃশ্যমান করা। অর্থাৎ, যে হার্ডওয়্যার এর মাধ্যমে কম্পিউটারে ইনপুটকৃত কিংবা নির্দেশনা অনুযায়ী ডাটা বা তথ্য দৃশ্যমান করা হয় তাকেই আউটপুট হার্ডওয়্যার বলা হয়। যেমনঃ মনিটর, প্রিন্টার, প্রোজেক্টর ইত্যাদি।
>> Storage: স্টোরেজ মানে বুঝাই যাচ্ছে এখানে বিভিন্ন তথ্য বা ডাটা স্থায়ী কিংবা অস্থায়ী ভাবে জমা থাকে বা রাখা হয়। এটি কম্পিউটার এর বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এখানে সকল প্রকারের তথ্য জমা রাখা হয়। যেমনঃ হার্ডডিস্ক, ফ্লপিডিস্ক, DVD ইত্যাদি।
>> Communication: কমিউনিকেশন যা কম্পিউটার এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই হার্ডওয়্যার এর মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে আরেক কম্পিউটারে বিভিন্ন তথ্য, ডাটা আদান প্রদান করা হয়। তথ্য কিংবা ডাটা আদান প্রদানের সাথে যেসব হার্ডওয়্যার যুক্ত সেগুলোকেই মূলত কমিউনিকেশন হার্ডওয়্যার বলে। যেমনঃ মডেম, গেটওয়ে, রাউটার, হাব ইত্যাদি।
হার্ডওয়্যার নিয়ে শেষকথা
>>> সর্বশেষে বলা যায়, হার্ডওয়্যার কি জানার পাশাপাশি আমরা যদি আরো বেশি বৃত্তান্ত জানার চেষ্টা করি হার্ডওয়্যার সম্পর্কে তাহলে আমাদের সকলের জন্যই এটি আরো সহজবোধ্য হবে বলে আশা করছি। কম্পিউটার চালনার ক্ষেত্রে হার্ডওয়্যার কি এ সম্পর্কে ধারণা থাকলে সহজেই সকল কার্য সম্পাদন করা সহজতর হবে।